‘‘মূল্যস্ফীতি হচ্ছে মূলতঃ মুদ্রাজনিত বিষয়’’-
এ উক্তির পক্ষে আপনার যুক্তি প্রদর্শন করুন। এ অবস্থায় মূল্যস্ফীতির চাপ প্রশমনে
কি কি ব্যবস্থা নেয়া যায়? জুন-২০১০
মুদ্রাস্ফীতিঃ মুদ্রাস্ফীতির সর্বজনগ্রাহ্য সঙ্গা প্রদান করা
অত্যন্ত কঠিন। কারণ বিভিন্ন অর্থনীতিবিদ মুদ্রাস্ফীতির বিভিন্ন সঙ্গা প্রদান
করেছেন তেব সাধারণভাবে মুদ্রাস্ফীতি বলতে এমন একটা পরিস্থিতি বুঝায় যখন
দ্রব্যমূল্য ক্রমাগত বৃদ্ধি পেতে থাকে অর্থাৎ অর্থের মূল্য ক্রমাগত হ্রাস পেতে
থাকে। অর্থনীতিবিদ কেমারার (Kemmerer) এর মতে ‘‘যখন দেশে মোট মুদ্রার যোগান চাহিদার
তুলনায় বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়ে পণ্যসামগ্রীর দাম বৃদ্ধি করে তখন মুদ্রাস্ফীতি ঘটে’’।
অর্থনীতিবিদ পল আইনজিগ (Paul Enizig) বলেন ‘‘ মুদ্রাস্ফীতি হল ক্রয়ক্ষমতার
প্রসারমূখী গতি যা দামস্তরের বৃদ্ধি ঘটায়। ’’ অধ্যাপক গ্রেগরী (Gregory) বলেন, ‘‘ ক্রয়ক্ষমতার অস্বাভাবিক পরিমাণ
বৃদ্ধিকেই মুদ্রাস্ফীতি বলা হয়’’। অর্থনীতিবিদ কীনস বলেন ‘‘যখন দ্রব্যসামগ্রীর
তুলনায় কার্যকর চাহিদা অধিক হয়ে পড়ে তখন সেই অবস্থাকে মুদ্রাস্ফীতি বলে’’।
এভাবে বিভিন্ন অর্থনীতিবিদ মুদ্রাস্ফীতির বিভিন্ন সঙ্গা
প্রদান করেছেন। সংক্ষেপে বলা যায়, যখন দেশে প্রচলিত অর্থের পরিমাণ উৎপাদিত মোট
দ্রব্যসামগ্রীর তুলনায় অধিক হয় এবং এর ফলে দ্রব্যমুল্য বা মূল্যস্তর ক্রমাগত
বৃদ্ধি পেতে থাকে তখন তাকে মুদ্রাস্ফীতি বলা হয়।
মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের উপায়ঃ মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে যে সব ব্যবস্থা
অবলম্বন করা হয় তাকে মোটামুটি তিন শ্রেণীতে ভাগ করা যেতে পারে; যথাঃ (ক) আর্থিক
ব্যবস্থা, (খ) রাজস্ব সংক্রান্ত ব্যবস্থা এবং (গ) অন্যান্য ব্যবস্থা।
ক) আর্থিক ব্যবস্থাঃ মুদ্রাস্ফীতির প্রধান করাণই হল অর্থের পরিমাণ বৃদ্ধি।
সুতরাং মুদ্রাস্ফীতি দুর করতে হলে অর্থের পরিমাণ কমাতে হবে। এ অর্থের পরিমান কমাতে
হলে ব্যাংক আৃণের পরিমানও কমাতে হবে। কারণ বর্তমান অর্থ ব্যবস্থায় ব্যাংক সৃষ্ট
ঋণের সাহায্যে বহু লেনদে হয়ে থাকে। এ ঋণের পরিমাণ কমাতে পারলে মোট প্রচলিত অর্থের
পরিমাণ কমে যায় এবং মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এ উদ্দেশ্যে প্রত্যেক দেশে
কেন্দ্রীয় ব্যাংক যে সমস্ত ব্যবস্থা অবলম্বন করে থাকে তার মধ্যে নিম্নলিখিতগুলো
প্রধানঃ
(১) ব্যাংক হার
বৃদ্ধিঃ কেন্দ্রী ব্যাংক যে হারে
বাণিজ্যিক ব্যাংককে টাকা ধার দেয় তাকে ব্যাংক হার বলা হয়। কেন্দ্রী ব্যাংক এ
ব্যাংক হার বাড়ালে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোও তাদের সুদের হার সাধারণত বাড়িয়ে দেয়। ফলে
ব্যাংক হতে ঋণ গ্রহণ ব্যসাধ্য হয়ে পড়ে এবং ঋণের পরিমাও স্বাভাবিকভাবেই কমে যায়।
এভাবে মুদ্রাস্ফীতির সময় কেন্দ্রী ব্যাংক ব্যাংক হার বাড়িয়ে দিয়ে মুদ্রাস্ফীতি
নিয়ন্ত্রণ করে।
(২) খোলাবাজারী কারবারঃ কেন্দ্রীয় ব্যাংক অনেক সময় খোলা বাজারে সরকারী ঋণপত্র
বিক্রয় করে ব্যাংক সৃষ্ট অর্থের পরিমাণ কমাতে চেষ্টা করে। এরূপভাবে ঋণপত্র বিক্রয়
করলে ক্রেতাগণ তাদের নিজ নিজ বাণিজ্যিক ব্যাংকের উপর চেক কেটে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের
পাওনা মিটিয়ে থাকে। এর ফলে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ঋণদান ক্ষমতা কমে যায় । এভাবে
কেন্দ্রীয় ব্যাংক খোলাবাজারে ঋণপত্র বিক্রয় করে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করার
চেষ্টা করে।
এছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংক অনেক সময় বাণিজ্যিক ব্যাংকের
রিজার্ভের হার পরিবর্তন, নৈতিক চাপ প্রয়োগ, প্রত্যক্ষ ঋণ নিয়ন্ত্রণ প্রভৃতির
সাহায্যে ব্যাংক সৃষ্ট ঋণের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে মুদ্রাস্ফীতি দুর করার চেষ্ট
করে।
খ) রাজস্ব সঙক্রান্ত ব্যবস্থাঃ বর্তমানে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা অনুযায়ী
মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য আর্থিক ব্যবস্থা অপেক্ষা ফিসক্যাল বা সরকারী আয়
-ব্যয় সংক্রান্ত নীতি অনেক বেশি কার্যকরী। মুদ্রাস্ফীতির মূল কারণ হল অতিরিক্ত
ব্যয়। কাজেই অতিরিক্ত ব্যয়ের পরিমান কমাতে পারলে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
সরকার যদি আয় ব্যয় নীতি এমনভাবে প্রচরন করেন যাতে মোট ব্যয়ের পরিমান কমে যায় তা
হলে মুদ্রাস্ফীতির চাপও কমে যাবে। রাজস্ব সংক্রান্ত ব্যবস্থার মধ্যে
নিম্নলিখিতগুলো প্রধান-
(১) সরকারী ব্যয় হ্রাসঃ সরকারী ব্যয় দেশের মোট ব্যয়ের পরিমানের একটা
মোটা অংশ। কাজেই মুদ্রাস্ফীতির সময় সরকারী ব্যয় কমানো উচিত। সরকারী খাতে যথাসম্ভব
অনাবশ্যক ব্যয় বন্ধ করা উচিত।
(২) অতিরিক্ত কর ধার্যঃ মুদ্রাস্ফীতি নিরোধের আর একটা প্রকৃত উপায় হল
করের পরিমাণ বৃদ্ধি করা। বেশি করে কর দিতে হলে জনসাধারণের হাতে ব্যয়যোগ্য আয় কমে
যায়। কাজেই মোট ব্যয়ের পরিমান কমে যায় । নতুন নতুন কর ধার্য করে এবং পুরাতন করের
হার বাড়িয়ে লোকের ক্রয় ক্ষমতা কমানো যেতে পারে।
(৩) সরকারী কর্তৃক ঋণ গ্রহণঃ মুদ্রাস্ফীতি নিরোধের জন্য সরকারী জনসাধারণের
নিকট হতে অধি পরিমাণ ঋণ গ্রহণ করে থাকে। এতে জনসাধারণের উদ্বৃত্ত আয় সরকারের হস্তগত
হওয়ায় তাদের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পায়।
(৪) সঞ্চয়ে উৎসাহ প্রদানঃ সরকার
জনসাধারণকে সঞ্চয়ে উৎসাহিত করেও মোট ব্যয়ের পরিমান হ্রাস করতে পারে।ভ সুদের হার
বাড়িয়ে দিলে জনসাধারণ অধিক পরিমাণে সঞ্চয়ে আগ্রহান্বিত হবে। এর ফলে ব্যয়ের পরিমান
কমে যাবে।
গ) অন্যান্য ব্যবস্থাঃ মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য আর্থিক ব্যবস্থা ও রাজস্ব
ব্যবস্থাদি ছা[ড়াও কতগুলো ব্যবস্থা অবলম্বন করা হয়। এগুলোকে প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণ
বলা হয়।
(১) উৎপাদন বৃদ্ধিঃ মুদ্রাস্ফীতির সময় দ্রব্যের উৎপাদন
যথাসম্ভব বৃদ্ধি করার চেষ্টা করতে হবে। দেশের অব্যবহৃত সম্পদগুলোকে ব্যবহার
দ্রব্যের উৎপাদন বাড়ানো যেতে পারে। দেশের উৎপাদনশীল সম্পদকে অপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি
উৎপাদন হতে সরিয়ে প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি উৎপাদন বাড়ানো যেতে পারে।
(২) আমদানী বৃদ্ধিঃ মুদ্রাস্ফীতির সময় আমদানির পরিমাণ
বাড়ালে বাজারে দ্রব্যের যোগান বাড়বে। ফলে মুদ্রাস্ফীতির চাপ কমে যাবে।
(৩) মজুরি নিয়ন্ত্রণঃ মুদ্রাস্ফীতির সময় শ্রমিকগণ মজুরির
হার বাড়ানোর জন্য চাপ প্রয়োগ করে। তাদের অধিক মজুরি দেয়ার ফলে উৎপাদন ব্যয় এবং
মুল্যস্তর বেড়ে যায়। তখন শ্রমিকেরা পুনরায় মজুরী বৃদ্ধির দাবি করে। এভাবে
ক্রমাগতভাবে মুল্যস্তর ও মজুরি বৃদ্ধি পেতে থাকে । সেইজন্য অনেক সময় আইন করে বা
আপোসের মাধ্যমে মজুরি বৃদ্ধি বন্ধ রাখা হয়।
(৪) মূল্য নিয়ন্ত্রণ ও রেশনিং ব্যবস্থাঃ অত্যাবশ্যক
দ্রব্যাদির মূল্য নিয়ন্ত্রণ ও রেশনিং ব্যবস্থা চালূ করে মুদ্রাস্ফীতির চাপ কিছুটা
কমানো যেতে পারে।
(৫) মুদ্রা অবৈধকরণঃ মুদ্রাস্ফীতি চরম আকার ধারণ করলে
অনেক সময় পুরাতন মুদ্রা পরিত্যাগ করে নতুন মুদ্রার প্রচলন হয়। কোন কোন সময় বেশি
মূল্যের নোটকে অচল করে দেয়া হয়।
(৬) গচ্ছিত অর্থ আটকঃ মুদ্রাস্ফীতির সময় জনসাধারণ বিশেষ
করে ধনী ব্যক্তিরা যাতে বেশি অর্থ ব্যয় করতে না পারে সেজন্য অনেক সময় সরকার তাদের
ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থের সম্পূর্ণ বা কিছু অংশ সাময়িকভাবে আটক করে রাখে। এর ফলে এ
অংশ ব্যয় করা সম্ভবপর হয় না। ফলে মুদ্রাস্ফীতির চাপ কমে।
মুদ্রাস্ফীতি নিঃসন্দেহে একটা জটিল ও গুরুতর সমস্যা। কোন
একটা বিশেষ পদ্ধতির সাহায্যে তা দুর করা সম্ভব নয়। এজন্য উপরোক্ত পদ্ধতির সাহায্যে
মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
অর্থের চাহিদা বলতে কি বুঝায়? কোন্ কোন্
উপাদানগুলো অর্থের চাহিদা নিরূপন করে? জুন-২০১০
অর্থের চাহিদাঃ সাধারণতঃ বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে সরকার স্বীকৃত সকল
প্রকার ধাতব ও কাগজী মুদ্রাকে অর্থ বলা হয়। তবে বিনিময়ের মাধ্যম ছাড়াও অর্থ
সঞ্চয়ের বাহন, ঋণ পরিশোধ, দ্রব্য ও সেবার দাম নির্ধারণ- প্রভৃতি প্রয়োজনে ব্যবহৃত
হয়। আধুনিক অর্থনীতিতে অর্থ অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক ভুমিকা পালন করে থাকে ।
মানুষ বিভিন্ন প্রয়োজনে নগদ অর্থ হাতে ধরে রাখতে চায় আবার সঞ্চয় আকারেও অর্থ জমা
রাখতে পারে। তবে নগদ অর্থ হতে ধরে রাখার প্রবণতাকেই অর্থের চাহিদা বলা হয়। এক
কথায়, কোন নির্দিষ্ট সময়ে সমাজের জনগন বিভিন্ন প্রয়োজনে যে পরিমাণ নগদ অর্থ হাতে
ধরে রাখতে চায়, তাকে অর্থের চাহিদা বলে।
অর্থের চাহিদাকে তিনভাগে ভাগ করা যায়।
1.
লেনদেন
জনিত অর্থের চাহিদা
২. সতর্কতামূলক অর্থের চাহিদা এবং
৩. ফটকা কারবার জনিত অর্থের চাহিদা।
অর্থের চাহিদার নির্ধারকঃ অর্থের লেনদেন চাহিদা, সতর্কতামুলক চাহিদা এবং ফটকা
চাহিদা অনেকগুলো উপাদান দ্বারা প্রভাবিত হয়। অর্থের চাহিদার নির্ধারক সমূহ হলো -
1.
আয়ঃ আয়ের উপর অর্থের চাহিদা বিশেষ করে অর্থের লেনদেন
ও সতর্কতামুলক চাহিদা নির্ভর করে। আয় বেশী হলে অর্থের চাহিদা বেশী হয় আবার আয় কম
হলে অর্থের চাহিদা কম হয়।
2.
ভোগ
প্রবণতাঃ ভোগ প্রবণতা অর্থের
লেনদেন চাহিদাকে বহুলাংশে প্রভাবিত করে। আয় বেশী হলে নগদ অর্থের চাহিদা বেড়ে যায়।
পক্ষান্তরে, ভোগ প্রবণতা কম হলে নগদ অর্থের চাহিদা কমে।
3.
সঞ্চয়
প্রবণতাঃ মানুষের সঞ্চয় প্রবণতা
নগদ অর্থের চাহিদাকে প্রভাবিত করে। সঞ্চয় প্রবণতা বেশী হলে বর্তমানে লেনদেনসহ
অন্যান্য সকল প্রয়োজনে নগদ অর্থের চাহিদা কম হয়। আবার সঞ্চয় প্রবণতা কম হলে
বিভিন্ন প্রয়োজনে নগদ অর্থের চাহিদা বেশী হয়।
4.
আয়
প্রাপ্তির ধরণঃ আয় উপার্জন বা
প্রাপ্তির মেয়াদের উপর নগদ অর্থের চাহিদা নির্ভর করে। আয় প্রাপ্তির মেয়াদ বেশী হলে
নগদ অর্থ হাতে ধরে রাখার প্রবণতা বেশী হয়। আবার আয় প্রাপ্তির মেয়াদ কম হলে অর্থের
চাহিদা কম হয়। যেমন মাসিক বেতন কাঠামোর অধীনে একজন কর্মচারীকে মাসের প্রথমেই
বেতনের একটি বড় অংশ হাতে নগদ রেখে দিতে হয়। আবার সাপ্তাহিক বেতন কাঠামোর অধীনে কম
অর্থ রাখলেই চলে।
5.
উন্নত
মুদ্রাবাজারঃ অর্থের চাহিদা
মুদ্রাবাজরের উপর নির্ভর করে। উন্নত মুদ্রাবাজার তথা ব্যাংক ও বীমা ব্যবস্থা উন্নত
হলে নগদ অর্থ হাতে ধরে রাখার প্রবণতা মানুষের কমে যায় তথা অর্থের চাহিদা কমে। আবার
মুদ্রা বাজার অনুন্নত হলে অর্থের চাহিদা বৃদ্ধি পায়।
6.
সুদের
হারঃ সুদের হারের উপর অর্থের
চাহিদা বিশেষ করে অর্থের ফটকা চাহিদা নির্ভর করে। সুদের হার কমলে অর্থের ফটকা
চাহিদা বাড়ে আবার সুদের হার বাড়লে অর্থের ফটকা চাহিদা কমে। তাছাড়া সুদরে হার বেশী
হলে মানুষের সঞ্চয় প্রবণতা বাড়ে, নগদ অর্থের চাহিদা কমে। আবার সুদরে হার কমলে
সঞ্চয় প্রবণতা কমে-নগদ অর্থের চাহিদা বাড়ে।
7.
দামস্তরঃ দামস্তর নগদ অর্থের চাহিদাকে বহুলাংশে প্রভাবিত
করে। দামস্তর বাড়দে থাকলে তথা মুদ্রাস্ফীতর সময়ে অর্থের চাহিদা বাড়ে। আবার দামস্তর
কমতে থাকলে তথা মুদ্রাসংকোচনের বেলায় অর্থের চাহিদা হ্রাস পায়।
8.
সামাজিক
নিরাপত্তাঃ নাগরিক সুবধিা বা
সামজিক নিরাপত্তা অর্থের চাহিদাকে বিশেষ করে অর্থের সতর্কতামূলক চাহিদাকে প্রভাবিত
করে। সামাজিক নিরাপত্তা থাকলে বর্তমানে লেনদেন চাহিদা বাড়ে - ভবিষ্যতের জন্য অর্থ
জমিয়ে রাখার প্রবণতা কমে। আবার সামাজিক নিরাপত্তার অভাব হলে বর্তমানে লেনদেন
চাহিদা কমে-ভবিষ্যতের জন্য অর্থ জমা রাখার প্রবণতা বাড়ে।
9.
প্রত্যাশাঃ প্রত্যাশা অর্থের চাহিদাকে নানাভাবে প্রভাবিত
করে। দাম বৃদ্ধির প্রত্যাশা, আয় বৃদ্ধির প্রত্যাশা, ব্যবসায়ে লোকসানের প্রত্যাশা
ইত্যাদি নানা বিষয় অর্থের নগদ চাহিদাকে প্রবাবিত করে।
10. ব্যাংক ব্যবস্থাঃ উন্নত ব্যাংক ব্যবস্থা নগদ অর্থের চাহিদাকে আধুনিককালে
বিশেষভাবে প্রভাবিত করে। ক্রেডিট কার্ড, ভিসা কার্ড ইত্যাদি সুবিধিা প্রদানের ফলে
নগদ অর্থ হাতে রাখার প্রবণতা হ্রাস পায়। পক্ষান্তরে, ব্যাংক ব্যবস্থা অনুন্নত ও
ব্যাংকিং সুবিধা কম থাকলে মানুষ বাধ্য হয়ে নগদ অর্থ হাতে ধরে রাখে।
No comments:
Post a Comment